আজ- রবিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

spot_img

এবার তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে কোটার বাধ্যবাধকতা থাকছে না

সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা তুলে দেওয়ার পর এবার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে শর্তসাপেক্ষে কোটা তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা সংরক্ষণ করা হবে না। আগে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির কোটায় যোগ্য চাকরি প্রার্থী না পাওয়া গেলে ওই পদে কাউকে নিয়োগ না দিয়ে শূন্য রাখা হতো। পদগুলো সংরক্ষণ করা হতো। এখন যদি কোটার কোনো যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া যায়, তা হলে জেলার সাধারণ মেধাবীরদের মধ্যে যারা মেধা তালিকার শীর্ষে রয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে পূরণের বিধান চালু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা বহাল থাকার কথা বলা হলেও পরিপত্র জারি করে সুস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে- কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে জেলার সাধারণ চাকরি প্রত্যাশীদের মধ্যে সাধারণ মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারীদের মধ্যে থেকে তা পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ, কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে পদ সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। মোট কথা সরকারি চাকরিতে জেলা, মহিলা, মুক্তিযোদ্ধা, এতিম, শারীরিক প্রতিবন্ধী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা কোটাসহ কোনো কোটার যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে ওই পদগুলো আর শূন্য রাখা হবে না। ওই পদগুলো তাৎক্ষণিক পূরণ করা হবে সাধারণ মেধাবীদের মধ্য থেকে।

গত ৭ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একপত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পঠানো একপত্রে বলা হয়, সরকার ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা আদেশে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্ত শাসিত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং করপোরেশনের চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য নির্ধারিত কোটা পূরণ করা সম্ভব না হলে ওই পদগুলো খালি রাখতে হবে। অর্থাৎ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।

ওই নির্দেশনা জারির পর থেকে পুলিশের কনস্টেবল পদে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিটি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটার যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় পদগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। সর্বশেষ হিসাবে অনুযায়ী পুলিশ কনস্টেবল পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য কোনো প্রার্থী না পাওয়ায় ৭ হাজার ৩৭৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ পদের সঙ্গে নতুন করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হলে একই ক্যাটাগরির প্রার্থীর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়।

এ পরিস্থিতিতে পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা পুলিশ হেড কোয়াটার্স থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে যদি এখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং কোটার প্রার্থী না পাওয়া যায় তাহলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব আবুল কাশেম মো: মহিউদ্দিন বলেন, এখন আর কোনো পদ সংরক্ষণ করার দরকার হবে না। আগে বলা হয়েছে কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে ওই পদে কাউকে নিয়োগ না দিয়ে শূন্য রাখতে হবে। কোনোভাবেই পদ পূরণ করা যাবে না।

কিন্তু গেল বছর, অর্থাৎ ৫ মে ২০১৮ তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদসমূহে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ কোটার (মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, এতিম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং আনসার ও আসনার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা সদস্য) কোনো পদ কোটার যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে ওইসব পদে জেলার প্রাপ্যতা অনুসারে নিজ নিজ জেলার সাধারণ প্রার্থীদের মধ্যে যারা মেধা তালিকার শীর্ষে রয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে পূরণ করতে হবে।

যুগ্ম সচিব বলেন, আগে নিয়ম ছিল কোটার পদে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে পদ শূন্য রাখতে হবে। এখন আমরা পরিপত্র জারি করে স্পষ্ট করে দিয়েছি, তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগে প্রথমে দেখতে হবে কোটার প্রার্থী পাওয়া যায় কি না। যদি কোটার যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া যায় এবং সেই কারণে পদ শূন্য থাকার বা পদ পূরণ করা সম্ভব না হয়, সেই ক্ষেত্রে ওইসব পদে জেলার জন্য বরাদ্দ করা পদের মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী সাধারণ প্রার্থীদের মধ্যে থেকে পূরণ করতে পারবে। কোনো পদ শূন্য রাখা বা পদ সংরক্ষণের দরকার হবে না।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রশাসন থেকে জারি করা ওই পরিপত্র দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং করপোরেশনের নিয়োগের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য হবে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থীদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles