আজ- শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রসব বেদনায় চটফট করা প্রসূতি মায়ের চিকিৎসার খরচ বহন করলেন পিরোজপুরের ডিসি সাজ্জাদ

পিরোজপুরে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি হওয়া টাকার অভাবে প্রসব বেদনায় ছটফট করা এক দরিদ্র প্রসূতি মায়ের অপারেশন, ঔষধ ও চিকিৎসার খরচ বহন করেছেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন। এ ঘটনাটি সামাজির যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে অনেকটাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বুধবার দুপুরে শহরের ফেয়ার হেলথ ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি থাকা নাদিরা আক্তার নদী নামে এক প্রসূতি নারীর টাকার অভাবে ডেলিভারী করাতে পারছিলো না তার দরিদ্র স্বামী খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষনিক সেখানে ছুটে যান এবং অপারেশন সহ সকল খরচ নিজেই বহন করেন। এমনটাই জানিয়েছেন ক্লিনিকে ভর্তি থাকা প্রসূতি নারী নাদিরা আক্তার নদী’র স্বামী রনি সেখ।

নাদিরা ও রনি দম্পত্তি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যান্ডে একটি বাসায় ভাড়া থাকরেও তাদের নিজেদের বাড়ি পার্শবর্তী বাগেরহাট জেলার সাইনবোর্ডের তেলিগাতি গ্রামে। রনি সেখ পেশায় একজন রিক্সা চালক।

নাদিরার স্বামী রনি সেখ জানায়, তিনি তার সন্তান সম্ভাবনা স্ত্রী কে সন্তান ডেলীভারীর জন্য মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। জেলা হাসপাতালে উপযুক্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় পার্শবর্তী ফেয়ার হেলথ ক্লিনিককে ভর্তি করেন। সেখানে অপারেশনের জন্য কতৃপক্ষ ১৪ হাজার টাকা দাবী করলে অপারেশন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে কারন তিনি একজন হতদরিদ্র রিক্সা চালক। টাকা না থাকার কারনে তিনি এদি ওদিক ছোটাছুটি কওে যখন ব্যার্থ হন তখন একজন যুবক তার স্ত্রী জন্য রক্তের ব্যবস্থা করেন এবং বিষয়টি ডিসি স্যার কে জানান। ডিসি স্যার তাৎক্ষনিক এসে ক্লিনিকের অপারেশন সহ সকল খরচ বহন করেন। পরে কতৃপক্ষ ডেলীভারীর অপারেশন করে। অপারেশন শেষে আমাদের ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। যার কারনে আমার সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছে আমরা সেই মানবতার ডিসি স্যারের নামে আমাদের ছেলের নাম সাজ্জাদ রাখতে চাই বলে জানিয়েছেন রিক্সাচালক রনি।

এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজমল হুদা নিঝুম জানান, খরটি শুনতে পেয়ে আমরা তাৎক্ষনিক ক্লিনিকে ছুটে যাই এবং মানবতার জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করি। তিনি সাথে সাথে ক্লিনিকে ছুটে আসেন প্রসূতি মায়ের খোঁজ খবর নিয়ে অপারেশন ও ঔষধ সহ সকল খরচ তিনি নিজেই বহন করেন। একজন জেলা প্রশাসক নিজের কাজ ফেলে শত ব্যাস্ততার মধ্যেও সাথে সাথে এসে প্রসূতি মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন এটি আমাদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি একজন মানবতার জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন বলেন কয়েকজন উদ্যেমী তরুন সমাজসেবক আমাকে বিষয়টি জানালে ক্লিনিকে ছুটে যাই গর্ভবতী মায়ের সুচিকিৎসার ব্যাবস্থা করি। বর্তমানে মা ও সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ্য রয়েছে। আমরা তার সুচিকিৎসা এবং পরবর্তী ঔষধ খরচ বহন করেছি। পাশাপাশি তার স্বামীর কর্মক্ষেত্রে সহায়তা করার চেষ্টা করবো।

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,ফিচার,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,মিডিয়া,লাইফ স্টাইল,সারাদেশ