আজ- মঙ্গলবার, ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

spot_img

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে একা থাকছেন শিক্ষিকা, রাতের আধারে গেট খুলে বখাটেদের হানা

চার মাস ধরে একটি বিদ্যালয় ভবনে এক শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকছেন ২৬ বছর বয়সী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা। গত মার্চ মাস থেকে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার মধ্য চরণী পত্তাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের চতুর্থ তলায় চার বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকছেন রুমি আক্তার নামের ওই সহকারী শিক্ষিাকা। তবে ওই বিদ্যালয়ে চারপাশে নাই কোন নিরাপত্তা দেওয়াল। ফলে প্রতিদিনই বখাটেদের আড্ডা হয় আশ্রয়কেন্দ্র সংযুক্ত ওই বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায়।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নকল চাবি দিয়ে বিদ্যালয় ভবনের মূল গেটের তালা খুলে স্থানীয় পাঁচ বখাটে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ওই শিক্ষিকার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে বখাটেরা তাদের পায়ে থাকা কয়েকটি জুতো ফেলে পালিয়ে যায়।
ওই শিক্ষিকা জানান, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বাড়ি বিদ্যালয় থেকে কয়েকশ গত দূরে অবস্থিত। রফিকুলের ছেলে মেহেদি কৌশলে সাবানের উপর মেইন গেটের তালার চাবির ছাপ দিয়ে একটি নকল চাবি তৈরি করে। এরপর তার সাথে আরও কয়েক যুবক মিলে গতরাতে বিদ্যালয় ভবনের মূল গেট খুলে ওই শিক্ষিকার কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসায় বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ওই শিক্ষিকা।
তিনি জানান, স্থানীয়রা এগিয়ে না আসলে তার ভাগ্যে কি ঘটত একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন।
ওই শিক্ষিকা আরও জানান, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে তিনি বিদ্যালয়ে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করাচ্ছেন।
তবে স্থানীয়রা জানান, ওই শিক্ষিকার বাড়ি বিদ্যালয় থেকে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে থাকলেও, তিনি বিদ্যালয় ভবনে আবাসিকভাবে অবস্থান করছিলেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক মোতালেব কাজী জানান, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে আলোচনা করে ওই শিক্ষিকাকে বিদ্যালয়ে থাকতে দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ওই শিক্ষক আইটি বিষয়ে দক্ষ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদানের জন্য তাকে বিদ্যালয়ে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানান মোবাইলের নেটওয়ার্ক দূর্বল থাকায় ওই এলাকায় অনলাইনে পাঠদান তো দূরের কথা মোবাইল ফোনেই স্বাভাবিকভাবে কথাও বলা যায় না। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান জাহাঙ্গীর।
একজন শিক্ষিকার বিদ্যালয় ভবনে আবাসিকভাবে বসবাস করার বিষয়টি জেনে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওই শিক্ষিকার বিদ্যালয়ে আবাসিকভাবে বসবাসের বিষয়টি জানা ছিল না বলে জানান ইন্দুরকানী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। রোববার বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ইন্দুরকানী থানা পুলিশ।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles