সন্ধ্যা নদীর বুক চিরে চলছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। নৌকার সামনে ব্যানারে লেখা ‘সেবার নৌকা’। নৌকায় আছে চাল, ডাল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। আছেন চিকিৎসক, পশুচিকিৎসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল। পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. খালেদা খাতুন নদীতীর ও চরের শ্রমজীবী মানুষের বাড়িতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার কাউখালী খেয়াঘাট থেকে সেবার নৌকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেন ইউএনও খালেদা খাতুন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস শহিদ, কাউখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল করিম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপকমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা শাকিল তালুকদার, উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা সাইদা খাতুন ও কাউখালী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আবদুল লতিফ।
বিকেল পাঁচটায় উপজেলার সন্ধ্যা নদীর তীরে সোনাকুর গ্রামে নৌকা নোঙর করে। সেখানে ৫০টি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। পাশাপাশি মানুষকে দেওয়া হয় চিকিৎসাসেবা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ। এ সময় তথ্যসেবা কর্মকর্তা ডায়াবেটিক ও রক্তচাপ মেপে দিয়েছেন কয়েকজনকে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শ্রমজীবী পরিবারের জন্য নৌকায় খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের একটি প্যাকেট রয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে থাকছে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি তেল, ১ কেজি লবণ, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ২৫০ গ্রাম টোস্ট, ২টি মাস্ক, ১টি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১ প্যাকেট হুইল পাউডার, ১টি সাবান, প্যারাসিটামল ওষুধ। পাশাপাশি মানুষের চিকিৎসার জন্য রয়েছে চিকিৎসক। প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবার জন্য এ দলে রয়েছেন উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা। গৃহপালিত পশুর চিকিৎসা ও পরামর্শের জন্য রয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ইউএনও খালেদা খাতুনের নানা উদ্যোগ ইতিমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি এর আগে স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বই উপহার দিয়েছেন। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ বাজার, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের খাদ্যসহায়তাসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছেন।
ইউএনও খালেদা খাতুন বলেন, যেখানে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো, সাধারণত সেখানের মানুষ সহায়তা ও সেবা বেশি পায়। নদীতীরের দুর্গম এলাকার মানুষ সুবিধাবঞ্চিত। এ কারণে তিনি নদীতীর ও চরের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য খাদ্যসহায়তা ও সেবা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। মানুষ যাতে এই কয়টা দিন ঘরে বসে সেবা নিতে পারে, সে জন্যই এই ‘সেবার নৌকা’ কার্যক্রম।