আজ- শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকায় কর্মরত ১১ জন এসি ল্যান্ডের মধ্যে পিরোজপুরের নাজিরপুরের কৃর্তিসন্তান কোতোয়ালি রাজস্ব সার্কেলের শাকিলা বিনতে মতিন

বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত ১১ জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসি ল্যান্ডের মধ্যে পিরোজপুরের নাজিরপুরের কৃর্তিসন্তান কোতোয়ালি রাজস্ব সার্কেলের শাকিলা বিনতে মতিন। ঢাকার কোতোয়ালি সার্কেলের শাকিলা বিনতে মতিন পিরোজপুরের নাজিরপুরে স্কুল ও কলেজ শেষ করে ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকল্যাণ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। নাজিরপুর উপজেলার নাওটানা বি,এম,মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান এর তৃতীয় কন্যা শাকিলা বিনতে মতিন। গ্রামে বেড়ে ওঠা শাকিলারা চার বোন। তাঁর শিক্ষক বাবা চেয়েছিলেন, মেয়েরা সমাজে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করুক। সেই স্বপ্নই বাস্তবায়ন করছেন শাকিলা বিনতে মতিন।
শাকিলা বিনতে মতিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছেন। এখানে প্রভাবশালীদের চাপ থাকে, ভূমি দখল হয়ে যায় হরহামেশাই। জালিয়াতি কিংবা জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনাও কম নয়। কিন্তু যখন কাজে নামেন, তখন শুধুই কর্মকর্তা, নারী নন ঠিক এভাবেই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন কোতোয়ালি সার্কেলের শাকিলা বিনতে মতিন।
বলতে যত সহজ শোনায়, কাজটা আদতে তত সহজ নয়। ১১ জনের চারজন নারী এসিল্যান্ডের তিনজনের কর্মক্ষেত্র পুরান ঢাকায়। এই এলাকায় বেশির ভাগ নারীর ভূমিকা গৃহকর্মেই সীমাবদ্ধ। সেখানেও নারীদের অবস্থান খুব ভালো নয়। এ রকম সামাজিক বাস্তবতায় যখন ভূমি অফিসের প্রধান হিসেবে নারীদের পাওয়া যায়, তখন অনেক ক্ষেত্রেই পুরুষ সেবা প্রার্থীরা বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিতে পারেন না।
শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, ‘মাঝেমধ্যে কাজ করা জটিল হয়ে ওঠে। আবার ব্যতিক্রমও হয়। অনেক সময় নারী কর্মকর্তাদের কাছে নারী সেবাপ্রার্থীরা তাঁদের সমস্যার কথা সহজে এবং আস্থার সঙ্গে জানাতে পারেন।’ নারী বলে নারীদের বিষয়ে দায়িত্ব অনুভব করেন এই কর্মকর্তা। বিশেষ করে নারীরা যখন জমির অধিকারের সন্ধানে আসেন।
শাকিলা আরো বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে আমাদের দেশে নারীদের পারিবারিক ভূমিতে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার প্রবণতা থাকে। এমনকি নারীরা এটাও সঠিকভাবে জানেন না যে তাঁদের জমির অবস্থান কোথায়।’ অধিকাংশ নারী ভূমি অফিস পর্যন্ত আসেনই না। যাঁরা আসেন, তাঁরাও অজ্ঞ করণীয় সম্পর্কে। শুধু সম্পদের হদিস জানলে উত্তরাধিকার উদ্ধার করা সম্ভব। কিন্তু এই কাজ করতে যে আইনের আশ্রয় নিতে হয়, সে ক্ষেত্রেও অনাগ্রহও দেখা যায় নারীদের মধ্যে। এ রকম পরিস্থিতিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তাদের সহযোগিতা করার জন্য বলেন শাকিলা।
তিনি স্বীকার করেছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তার কথা। এ ছাড়া তাঁরা সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও কাজে সহায়তা পান। ‘কাজটা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যেন কখনো কোনো ঘাটতি না থাকে। আমরা যদি আমাদের যোগ্যতাকে প্রমাণ করতে পারি, তাহলে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার পথটা আরও সুগম হবে।’

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,মিডিয়া,সারাদেশ