আজ- শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিরোজপুরে একদিনে পুলিশ-সাংবাদিকসহ ২১ জন করোনায় আক্রান্ত উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু

পিরোজপুরে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আরো ২১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২৭ জন।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. হাসানাত ইউসুফ জাকী মঙ্গলবার রাতে(১৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, করোনা আক্রান্ত হিসেবে জেলায় এক দিনে সর্বোচ্চ ২১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে জেলার মঠবাড়িয়ায় ৮ জন, ভান্ডারিয়ায় ৯, সদর উপজেলায় ৩ ও নেছারাবাদে ১ জন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলী হাসান জানান, উপজেলায় নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮ জন। এদের মধ্যে সম্প্রতি লকডাউন দেয়া এলাকা থানা পাড়ার একই পরিবারের ৪ জন রয়েছে। এছাড়া উপজেলা সদরের ৪ নম্বর ওয়াার্ডে একজন (৪৪), গুলিশাখালী ইউনিয়নের হোতাখালী গ্রামে একজন (৩৮), উপজেলার পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (৩৪) ও পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার খোলপটুয়া গ্রামের একজন (৩৪) নিয়ে ৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। উপজেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ জন। তবে এদের মধ্যে ১৮ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরছেন।

জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলায় এক এ এস আইসহ ৪ পুলিশ সদস্য, বরিশাল থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকার ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত এক সাংবাদিক (৪৪), ভান্ডারিয়া পৌর শহরের এক ব্যবসায়ী দম্পত্তি ও একজন ইমামসহ ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করে জানান,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এইচ এম জহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, আক্রান্তদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, করোনার ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করতে আমাদের উপজেলাসহ মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চললেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এদিকে পিরোজপুরে মঙ্গলবার করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ৩ জন। মঙ্গলবার রাতে পিরোজপুর কোভিড ১৯ ডেডিকেট আম্বিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার চারাখালী গ্রামের বাসিন্দা সুনীল চন্দ্র শীল। একই দিন সকালে জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যায় মো: ফারুকুজ্জামান মন্টু জোমাদ্দার নামে এক স্কুল শিক্ষক এবং দুপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলায় জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে শিল্পী বেগম (৪০) নামের এক নারী মারা যায়। শিল্পী বেগম মঠবাড়িয়া উপজেলার বেতমোর গ্রামের কামাল দফাদারের স্ত্রী।

জানা যায়, সুনীল চন্দ্র শীল মঙ্গলবার বিকেলে শ্বাসকষ্ট নিয়ে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। সেখান থেকে তাকে পিরোজপুর কোভিড ১৯ ডেডিকেট আম্বিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সুনীল চন্দ্র শীল। তার মৃত্যুর পরে পরিবার বা আত্মীয়স্বজন কেউই লাশ নিতে হাসপাতালে আসেনি। পরে ইন্দুরকানি থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, সুনিলের কোন আত্মীয়-স্বজন না আসায় থানাপুলিশ মৃত্যের লাশ নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই ইন্দুরকানিতে শেষকৃত সম্পন্ন করে।
এর আগে গত সপ্তাহের বুধবার সুনীল চন্দ্র শীলের এক ভাই নির্মল শীল করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ওই পরিবারের অন্য সদস্যদের করোনা উপসর্গ রয়েছে। কিন্তু নির্মল শীল মারা যাওয়ার পরেও অদ্যাবধি ওই বাড়িটি লকডাউন করা হয়নি।

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,মিডিয়া,সারাদেশ