আজ- শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ১০ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা : ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে মঙ্গলবার দুপুরে মাত্র ৬৯০ কিলোমিটার দূরত্বে থাকা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। খবর ইউএনবির

সতর্ক সংকেতঃ মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঝড়ো হাওয়ার সতর্কতাঃ ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

জেলেদের জন্য সতর্কতা: উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের অবস্থান: পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ’আম্পান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে শেষরাত হতে বুধবার বিকেল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এদিকে, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে দুপুরের পর থেকে পিরোজপুরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় পিরোজপুরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুতিমূলক নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আজ মঙ্গলবার পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জেলার ৭টি উপজেলায় ২৩১টি ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব সাইক্লোন সেল্টারে ২ লক্ষ ৩২ হাজার ২৫০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থাকায় প্রয়োজনবোধে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সাইক্লোন সেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। যাতে করে মানুষ শারিরীক দূরত্ব বজায় রেখে সেখানে অবস্থান করতে পারে।

পিরোজপুরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে কন্টোল রুম। এছাড়া জরুরী চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠনসহ জেলায় ৬০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাকা হয়েছে।

জেলার চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের মঙ্গলবার বিকেলে সাইক্লোন সেল্টারসহ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনা মানুষদের জন্য শুকনো খাবার এবং ভোর রাতে সেহেরীর জন্য খিচুরীর ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,মিডিয়া,সারাদেশ