আজ- বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিরোজপুরে পড়তে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় আমফান এর প্রভাব : ৫৫৭ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত

সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ মোকাবিলায় পিরোজপুর জেলায় ৫ শত ৫৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। মাইকিং করে নদী তীরবর্তী এলাকা ও চর এলাকায় জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। জেলার ৭ উপজেলায় ৩০০টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে এবং এসব আশ্রয় কেন্দ্র্রে স্থানীয়দের আশ্রয় নেওয়ার পর অতিরিক্ত প্রয়োজন হলে আরো ২৫৭টি বেসরকারি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মোজাহারুল ইসলাম।
সরকারি ৩০০টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে জেলার নাজিরপুরে ৪১টি, ইন্দুরকানীতে ১৯, মঠবাড়িয়ায় ৬১, কাউখালীতে ১১, ভান্ডারিয়ায় ৫৩, নেছারাবাদে ২৯, পিরোজপুর সদরে ৮৬টি কেন্দ্র সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
এলাকার মানুষ জন এখনও আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি। করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কারণে সাধারণ মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন ইউনিয়েন ইউপি সদস্য ও জনগণ। মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা জাকির তালুকদার বলেন, ‘ এলাকায় ঢাকা-নারায়নগঞ্জ দিয়ে অনেক লোক ঈদের জন্য বাড়ীতে এসেছে। ঝড় শুরু হলে সবাই তো এক সাইক্লোন শেল্টারে যাবে। সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা থাকবেনা বলে তারা অনেকটাই আতংক।
মঠবাড়িয়া উপজেলার সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ এলাকা সাপলেজা ইউনিয়নের বলেশ^র নদীর তীরবর্তী খেতাছিড়া গ্রামের ঘূর্ণীঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ বেরীবাধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়সারা ভাবে সংস্কার করলেও বর্তমান ঘূর্ণীঝড় আম্পানের জলোচ্ছাসে ভেঙ্গে তলিয়ে যেতে পারে বলে সেনা বাহিনী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তরা ওই এলাকায় সকল মানুষকে দুপুরের পরপরই নিরাপদ আশ্রয়ে নেবার ব্যবস্থা করেছে। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মাঠ কর্মীরা বলেশ^র তীরবর্তী জনসাধারণকে ঘূর্ণীঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার জন্য ঘুরে ঘুরে মাইকিং করে সতর্ক করছে। ইন্দুরকানী উপজেলার ঝুকিপ্রবন এলাকা হিসেবে পরিচিত কালাইয়া, সাঈদখালী, খোলপটুয়া, বালিপাড়া,টগরা এলাকার বলেশ^র নদী বেড়িবাধের পাশর্^বর্তী স্থানে বসবাস করা বাসিন্দারা রয়েছে বেশি আতংকে। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বর ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সন্ধ্যার মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, জেলার ৭ উপজেলায় ৫৫৭টি আশ্রয় কেন্দ্র্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ সব আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থাকার জন্য উপযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে যথাযথবাবে বিদ্যুৎ সংযোগ, পানির ব্যবস্থা ও পয়: নিষ্কাসনসহ আশ্রয় কেন্দ্রে থাকাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকা ও চর এলাকায় মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এছাড়াও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য আশ্রয় কেন্দ্রে আসা সকলকে মাক্স ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন আরো জানান, সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ আঘাত হানার পরপরই জরুরী চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ৬০ টি মেডিকেল টিম ও বিভিন্ন স্তরের ১৭৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম খান জানান, সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ মোকাবিলার জন্য জেলার প্রতি থানার ওসিদের স্থানীয়দের নিরাপত্তাসহ সার্বিক সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়াদের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশকে পাহারার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,সারাদেশ