আজ- শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সৌদিআরবে থেকেও তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত!

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ১৩ বছর পর পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাঁখারীকাঠি ইউনিয়নের বাঘাজোড়া গ্রামের মৃত ছায়েব আলীর ছেলে কাইউম খান নিজেকে ওই হামলায় আহত বলে দাবি করছেন।

গ্রেনেড হামলায় আহতদের নিয়ে ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট রাত ৯টায় বিটিভিতে প্রচারিত ২১ আগস্ট স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘রক্তাক্ত ২১ আগস্ট’ অনুষ্ঠানে গ্রেনেড হামলায় আহত হিসেবে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।

এ ছাড়া ওই (২০১৯ সালের ২১ আগস্ট) দিন বিকালে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা সংক্রান্তে প্রকাশিত সংবাদের সঙ্গে সেখানে গ্রেনেড হামলায় আহতদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলার ছবি পরদিন (গত ২২ আগস্ট) কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়। ওই ছবিতেও কাইউম খান গ্রেনেড হামলায় তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন প্রধানমন্ত্রীকে দেখাচ্ছে এমন চিত্র রয়েছে।

বিটিভিতে প্রচারিত ওই অনুষ্ঠানসহ পত্রিকায় ছাপানো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাইউম খানের ওই ছবি দেখে তার নিজ গ্রামবাসীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হতবাক হয়েছেন এবং দলের সঙ্গে এমন প্রতারণার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের দাবি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় কাইউম খান সৌদিতে চাকরিরত ছিলেন। সেখানে তিনি এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। ওই দুর্ঘটনার আঘাতের চিহ্নকে তিনি গ্রেনেড হামলায় আহতের চিহ্ন বলে ওই সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৬ সালে সৌদি থেকে দেশে ফিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন কাইউম খান। গ্রেনেড হামলায় নিহত ও আহতদের আর্থিক সহযোগিতা করায় তিনি এ সুযোগ গ্রহণের জন্যই ঘটনার ১৩ বছর পর নিজেকে ওই হামলায় আহত হিসেবে দাবি করেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান।

কাইউম খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছি এটাই সত্য। স্থানীয় রাজনীতির প্রতিহিংসার কারণে আমার প্রতিপক্ষ এটিকে মিথ্যা বলে প্রচার করছে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে পত্রিকায় নিজের ছাপা হওয়া ছবি দেখিয়ে নতুন করে প্রতারণা শুরু করেছে কাইউম খান। সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ, প্রমোশন, প্রকল্প এনে দেওয়া, রাস্তা-ঘাট-ব্রিজ-কালভার্ট এর জন্য টাকা বরাদ্ধ দেওয়া, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বিশেষ বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে উল্লেখিত কাইউম খান।

কাইউম খান এর হাতে প্রতারণার শিকার নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কম্পিউটার অপারেটর আঃ ছালাম জানান, তার প্রমোশন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মোটা অকেংর অর্থ হাতিয়ে নিলেও কোন প্রকার উপকারই করতে পারেনি এবং অর্থও ফেরত দেয়নি।

এছাড়া কাইউম খান এর বিরুদ্ধে পিরোজপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগ রয়েছে। এবিষয়ে তার মন্তব্য জানতে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করে নি।

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,সারাদেশ