আজ- রবিবার, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিরোজপুরের নাজিরপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্রীজের মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ

পিরোজপুরের নাজিরপুরে বেলায়েত হোসেন বুলু নামে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আয়রণ ব্রীজের সরকারী পুরাতন লোহার মালামাল আত্মসাত করে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার তারাবুনিয়া বাজারে ওই ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে থাকা আয়রণ ব্রীজের লোহার ৮শ’ ৮০ কেজি মালামাল অবৈধভাবে তিনি বিক্রি করেন। ক্রেতা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গহরডাঙ্গা গ্রামের মৃত সিরাজ শেখের ছেলে ই¯্রাফিল শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ক্রেতা ই¯্রাফিল একটি টমটম যোগে ওই মালামাল নিয়ে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়া করে বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ভাইজোড়া বাজারে স্থানীয় অমিত হাসান, সুজন ইসলাম ও রিয়াদ হোসেন মালামালসহ টমটমটি আটক করে। তারা তিনজনই জানান, আটক করার পর ই¯্রাফিল মালামাল গুলো চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু কাছে ১৯ হাজার ৬শ’ টাকায় ক্রয় করেছেন বলে জানান। তখন ই¯্রাফিল মুঠোফোনে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবগত করলে চেয়ারম্যান সেখানে গিয়ে ওই তিনজনসহ আরো অনেকের উপস্থিতিতে মালামাল গুলো বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন এবং মালামালসহ ই¯্রাফিলকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন।
এ সংবাদ পেয়ে ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া ও মাটিভাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে হাজির হন। তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলুর সামনেই ই¯্রাফিল মালামাল গুলো চেয়ারম্যানের কাছে ক্রয় করার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। তবে প্রশাসনের কাছে মালামাল গুলো বিক্রি করার ব্যাপারে কোন সন্তোষ জনক জবাব দিতে পারেনি চেয়ারম্যান। পরে উত্তেজিত জনতা প্রশাসনের সামনেই বিক্ষোভ করে বিভিন্ন শ্লোগানের মাধ্যমে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিচার দাবী করেন। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলীর সহায়তায় পুলিশ ওই মালামাল গুলো জব্দ করেন।
ঘটনার বিষয়ে ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া ও মাটিভাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুল ইসলামের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলুর কাছে জানতে চাইলে তিনি একেক সময় একেক ধরণের কথা বলে। এক পর্যায়ে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি আলাদা ভাবে তার প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুনিরুজ্জামান জানান, টমটমসহ মালামাল গুলো পুলিশ জব্দ করেছে। জব্দকৃত ওই মালামাল ও ক্রেতা ই¯্রাফিল বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া জানান, এসকল মালামাল ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষণের রাখার যে নিয়ম-কানুন রয়েছে তা পালন করা হয়নি। তাছাড়া উপজেলা নিলাম কমিটির অনুমোদন ছাড়া সরকারী কোন মালামাল বিক্রির সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান যা কিছুই করেছেন তা অবৈধ বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।
ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, সরকারী কোন মালামাল উপজেলা পরিষদের নিলাম কমিটির অনুমোদন ছাড়া বিক্রি করার সুযোগ নাই। তবে চেয়ারম্যান সে নিময় না মেনে অবৈধভাবে মালামাল গুলো বিক্রি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়। এ ঘটনায় সরকারের পক্ষে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,রাজনীতি,সারাদেশ