আজ- মঙ্গলবার, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ পিরোজপুর আদালতে এহসান গ্রুপের মামলার আসামী হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুরের জামিন শুনানী

এহসান গ্রুপের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর এর জামিন শুনানীর আজ ২৪ জুলাই রেখেছে পিরোজপুরের আদালত। উচ্চ আদালত থেকে ৪২ দিনের আগাম জামিন শেষে ১৯ জুলাই মঙ্গলবার পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হলে আদালত তার জামিন শুনানীর রেখেছেন ২৪ জুলাই তারিখে।

এদিকে এহসান গ্রুপের কয়েকটি মামলার আসামী হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর জামিন শুনানী নিয়ে এহসান গ্রুপের ফিল্ড অফিসার ও গ্রাহকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেক গ্রাহকরাই হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুরকে সরাসরি দায়ী করেছেন আবার অনেকে পরোক্ষভাবে। অনেক গ্রাহকরাই বলছেন প্রায় প্রতিবছরই হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর এহসান গ্রুপের বাৎসরিক মাহফিলে এসে গ্রাহক ও সাধারণ জনসাধারণকে এহসান গ্রুপে টাকা রাখার বিষয়ে উৎসাহী করতেন। ধর্মীয় অনুভূতির কারনে হাজার হাজার গ্রাহক তাদের আমানতের টাকা সুদমুক্ত মুনাফা পেতে এহসান গ্রুপের কাছে রাখতেন। তাই হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর কে সরাসরি এহসান গ্রুপের সাথে যুক্ত থেকে প্রতারনার অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহকরা। অনেক গ্রাহকরাই জানিয়েছেন আদালত হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর কে জামিন দিলেও স্থানীয় গ্রাহকরা তাকে ছাড় দিবেন না। তারা ২৪ জুলাই রোববার আদালত চত্তর ঘেরাও দিবেন বলেও জানিয়েছে অনেকে। ফলে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর জামিন নিয়ে আলোচনা চক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।

ভুক্তভূগী গ্রাহক নিজাম উদ্দিন জানান, দির্ঘদিন বিদেশে থাকার পরে দেশে এসে সকল টাকা এহসান গ্রুপে রাখি সুদমুক্ত মুনাফা পাওয়ার আশায়। আমি এবং আমা পরিবারের সবার মিলে প্রায় কোটি টাকা জমা রাখি এহসান গ্রুপের কাছে। কিন্ত এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান ও তার ভাইয়েরা আমাদের সাথে প্রতারনে করে সকল গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেয়। এর সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর। তার বক্তব্যেই সবাই বেশি উৎসাহ পেয়েছে আমরা তার জামিন আদেশ প্রত্যাহার চাই।

ভুক্তভূগী মাওলানা মোস্তফা কামাল জানান, তার ২০ লাখ টাকা রয়েছে এহসান গ্রুপের কাছে। বছরের পর বছর ঘুরেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। এহসান গ্রুপের সকল স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে এখন তাদের এই টাকা কিভাবে পাবেন তা নিয়ে হতাশ। হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর সহ যারা এহসান গ্রুপের সাথে জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার কওে আইনের আওতায় আনা হোক।

ভুক্তভূগী কোহিনুর বেগম জানান, তিনি একজন গৃহিনী তিনি ২৫ লাখ টাকা পাবেন এহসান গ্রুপের কাছে। প্রায় এক বছর রাগীব হাসান ও তার ভাইয়েরা জেলে থাকলেও কোন টাকা উদ্ধার হয়তি তিনি পাননি। এখন সরকার সব নিয়ে নিয়েছে আরো কতদিন ঘুরতে হবে জানিনা। পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় জীবন কাটাচ্ছি। আমানতের টাকার জন্য পথে বসে গেছি আমার টাকা যে কোন ভাবে ফেরত চাই।

পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো: আলাউদ্দিন জানান, এহসান গ্রুপের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুরের নামে চারটি মামলায় তিনি আসামী রয়েছেন। তিনি উচ্চ আদালত থেকে ৪২ দিনের আগাম জামিন শেষে আজ আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হলে আদালত তার জামিন শুনানীর তারিখ রেখেছেন ২৪ জুলাই। আগামী ২১ জুলাই উচ্চাদালত থেকে নেয়া ৬ সপ্তাহের জামিন শেষ হবে।

উল্লেখ্য, প্রতারনা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকদের থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগিব আহসান সহ তার ভাইয়েরা জেল হাজতে রয়েছে। এহসান গ্রুপের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান ও তার স্ত্রী সালমা আহসানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে। প্রতারনার মামলায় এহসান গ্রুপের সকল স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিয়েছে জেলা জজ আদালত। রাগিব আহসান ও তার সংঙ্গীদের নামে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে প্রতারনার মাধ্যমে ১০১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা স্থাবর অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করার আদেশ দিয়েছে আদালত। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে রাগিব আহসান ও পিরোজপুর থেকে তার দুই ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

বিভাগ: অন্যান্য,জাতীয়,টপ নিউজ,ফিচার,বরিশাল বিভাগ,ব্রেকিং নিউজ,মিডিয়া,লাইফ স্টাইল,সারাদেশ